বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ০৭:০৯ পূর্বাহ্ন
সাভার পৌরসভা এলাকায় আলোচিত শিক্ষার্থী রোহানুল ইসলাম রোহান (১৯) হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ এক বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার পাইনি পরিবার। এছাড়া তার হত্যার কোনো ক্লু উদঘাটন হয়নি।
রোববার (০৬ ফেব্রুয়ারি) সাভারের উলাইল রোহানের বাড়িতে গিয়ে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
রোহানের পরিবার জানায়, গতবছর ২০২১ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সাভার পৌরসভা এলাকার ব্যাংক কলোনি মুড়ি মটকা এলাকায় তাকে হত্যা করা হয়।
বর্তমানে মামলাটি সাভার মডেল থানায় থাকলেও দীর্ঘ সময় পরেও তদন্তের কোনো অগ্রগতি না পেয়ে তাদের পরিবার চায় মামলাটি পিআইবি বা সিআইডির অধীনে দেওয়া হোক।
রোহানের মা আছমা আক্তার বলেন, আমার ছেলে রোহানুল ইসলাম রোহান আজকের এই দিনে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি এখন একজন সন্তান হারা মা। আমার ছেলেকে সেদিন সিয়াম ও জোবাইয়ের বাসা থেকে সেদিন সন্ধ্যায় বের করে নিয়ে যায়। কিন্তু পরে আমার ছেলে আর ফিরে আসেনি।
এসময় কানা জড়িত কন্ঠে আছমা আক্তার বলেন, আমার ছেলের লাশ এসে আমার বাড়িতে। আমি এর বিচার একবছর যাবৎ চাইছি। কিন্তু এখনো কোনো বিচার পায়নি। আমার ছেলে একজন ছাত্র। আমার ছেলেকে যারা মারলো তাদের বিচার চাই। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই। আবরার হত্যার যেমন বিচার হয়েছে আমার ছেলের হত্যাকারীদের তেমন ফাঁসি হোক৷ কি কারণে আমার ছেলেকে বাসা থেকে বের করে নিয়ে মারলো আজও আমি জানতে পারলাম না।
রোহানের জেঠা মোঃ মকবুল মিয়া বলেন, আমার ভাতিজা একজন ছাত্র। আজ তার মৃত্যুর এক বছর হয়েছে। আজও পর্যন্ত তার বিচার পেলাম না। মুল আসামিদের গ্রেফতার করা হলো না। আর তার মৃত্যু কেন হলো তা আমরা জানতে পারলাম না। আর কোনো বাবা-মা যেনো তাদের সন্তান না হারায়।
রোহানের বাবা সোবাহান মিয়া বলেন, আমার ছেলেকে আজকের এই দিনে হত্যা করা হয়। আজ এক বছরে কয় জন আটক করা হলেও প্রধান যে আসামি তাকে আটক করা হয়নি। আর যারা আটক হয়েছে তারা জামিনে প্রকাশ্যে ঘুরে বেরাচ্ছে৷ আজ এক বছর হয়ে গেলো আমার ছেলের হত্যার কোনো ক্লু পেলাম না। কি কারণে হত্যা হলো তাউ যানতে পারলাম না। বাবাা হিসেবে আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার দেখে মরতে পারলেও মনটাকে শান্তি করতে পারতাম।
মামলাটির এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সাভার পৌর এলাকার কর্ণপাড়ার বাসিন্দা মোঃ সোবহান মিয়ার ছেলে রোদেলা মডেল স্কুলে দশম শ্রেণীর মানবিক বিভাগের এস.এস.সি পরীক্ষার্থী রোহানুল ইসলাম রোহান (১৮)। তাকে গতবছর ২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মোঃ রাহিদ, মোঃ হৃদয়, আসিফ, রাকিবুল ইসলাম রকি, মোঃ হৃদয় (২), আকিরুল, রবিউল, আপন, দুদুল, সিয়াম, শীখর, সজিব, সুফিয়ান হৃদয়, সাজ্জাদ ও ডানু মিলে সঙ্গবদ্ধ হয়ে মুড়ি মটকা মোড়ের এলাইড স্কুলের সামনে সুইচ গিয়ার দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
মামলাটির সাবেক তদন্তকারী কর্মকর্তা তাহমুদুল ইসলাম। তিনি বর্তমানে কেরানীগঞ্জ থানায় দ্বায়িত্ব পালন করছেন। তার সময়ে তিনি প্রধান আসামি ছাড়া ৭ জা আসামি গ্রেফতার করে ছিলো। তিনি বলেন, এই মামলায় আমার দ্বায়িত্বের সময় কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। পরে আমি যাওয়ার আগে সাভার মডেল থানার আরেক এসআই পাভেল সাহেবকে দেওয়া হয়েছে৷ পরবর্তী খবর আর জানি না।
কেন রোহানকে হত্যা করা হয়েছে? এটা কি জানা গেছে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আসলে তাদের ভেতর একটি পূর্ব শত্রুতা ছিলো। তাই তাকে হত্যা করা হয়েছে।
এ বিষয়টি জানতে সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ পাভেল মোল্লার মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।